আশারায়ে মুবাশশারা ( সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবা)
অবতরনিকা: ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মুসলিমমাত্রই জানে ও মানে যে, পার্থিব জগতের কর্মফলের উপর নিভর করে পরকালের শান্তি বা বেহেশত ও শাস্তি বা দোযখ। কারা জান্নাতি হবে আর কারা জাহান্নামি হবে তাদের কর্মপদ্ধতি ও লক্ষণ পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে জানা যায়। তবে রাসূল সা: এর সাহাবিদের মধ্যে যারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নবীজি সা: এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামের জন্য নিজের জানমাল উৎসর্গ করতেও কুন্ঠিত হন নি তাদের অনেকেই তিনি জান্নাতি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এ শ্রেণীর সাহাবাদের সত্যতা ও নিষ্ঠার জন্য নবী করীম সা: তাদের প্রতি একান্ত সন্তুষ্ট হয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
আশারায়ে মুবাশশারাঃ আশারায়ে মুবাশশারার শাব্দিক অর্থ হলো শুভ সংবাদ প্রাপ্ত দশজন। ইসলামী পরিভাষায় যে দশজন সাহাবি সম্পর্কে রাসূল সা: তাদের জীবদ্দশায় দুনিয়াতেই জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করেছেন, তাদেরকে
“ আশারায়ে মুবাশশারা” বলা হয়। আবু মনসুর বাগদাদী বলেছেন, ‘ সমস্ত উম্মতের মধ্যে সবোচ্চ মর্যাদার অধিকারী হলেন পর পর চার জন খলিফা। এরপর অবশিষ্ট ছয় জন। ‘ হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ: বলেছেন, “ দশজন সাহাবী জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদটি একটি হাদিসে থাকায় তারা ‘ আশারায়ে মুবাশশারা’ নামে প্রসিদ্ধ লাভ করেছেন। ” অন্যথায়, আলাদা আলাদাভাবে রাসূল সা: আরো অনেককেই জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদ দান করেছেন; যেমন নবীজি সা: এর বিবিগণ, আহলে বায়ত, হাসান, হোসাইন, তাদের মা ও নানি, হযরত হামযা প্রমুখ সাহাবায়ে কিরাম রা: । প্রকাশ থাকে যে, আশারায়ে মুবাশশারা বলতে যে দশজনকে বুঝায় তারা হলেন,
১। হযরত আবু বকর রা:
২। হযরত ওমর রা:
৩। হযরত উছমান গনি রা:
৪। হযরত আলী রা:
৫। হযরত তালহা রা:
৬। হযরত যুবায়ের ইবনুল আওযাম রা:
৭। হযরত সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা:
৮। হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ রা:
৯। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রা:
১০। হযরত আবু ওবায়দা ( আমের) ইবনুল জাররাহ রা:
আশারায়ে মুবাশশারা ঘোষণা দেয়ার প্রেক্ষাপট:
উপর্যুক্ত সৌভাগ্যবান মহাপুরুষদের ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ গোষণা দেয়ার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, হিজরী দশম সনে মদীনায় এব ভয়াবহ দুভিক্ষ দেখা দেয়। তখন বহুসংখ্যক লোক অর্ধাহারে অনাহারে কালাতিপাত করছিল। তাই খাদ্যসামগ্রীর অপ্রতুলতায় মদীনাবাসী সীমাহীন উদ্বিগ্নতা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিল। এমনিতর দুরবস্থার দিনে একদা মহানবী সা: মদীনায়র মসজিদে খুতবা প্রদান করছিলেন। এমন সময় সে মজলিশে এক লোক সংবাদ দিল যে, শাম দেশ থেকে প্রচুর খাদ্যসামগ্রী নিয়ে একদল বণিত মদীনায় এসেছে এবং তারা তা বিক্রি করতে চায়। এ সংবাদ শোনামাত্র উপস্থিত সাহাবাদের অনেকেই ব্যবসার উদ্দেশ্যে মসজিদ থেকে বের হয়ে ক্রয়বিক্রয়ে প্রবৃত্ত হয়েছিল। তবে মাত্র দশজন সাহাবি পার্থিব ব্যবসার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে প্রিয় রাসূল সা: এর বাণীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রকৃত আল্লাহ ভক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন। অর্থাৎ তারা সে পার্থিব লোভনীয় বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে মগ্নভাবে মহানবী সা: এর খুতবাই শুনছিলেন। এ ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেই পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেছেন, ং আর যখন কোথাও ব্যবসায় বাণিজ্য কিংবা কোন খেল-তামাশা অবলোকন করে, তারা আপনাকে খুতবায় রত অবস্থায় পরিত্যাগ করে বিক্ষিপ্তভাবে চলে যায়। আপনি তাদেরকে বলে দিন, তোমাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে যা কিছু রয়েছে তা বাণিজ্য এবং তামাশা থেকে উত্তম। আর আল্লাহতায়ালা উত্তম রিযিকদাতা।” এ প্রেক্ষাপটেই তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে, অর্থাৎ যারা সেদিন মহানবী সা: এর মজলিশ ত্যাগ না করে, বরং নিমগ্ন অবস্থায় ভক্তিভরে তাঁর বাণী শুনছিলেন তাদের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে জান্নাতি বলে ঘোষণা প্রদান করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ‘ আশারায়ে মুবাশশারা’ তথা জীবদ্দশায় বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজন যেভাবে পবিত্র কুরআন ও রাসূল সা: এর আদর্শে উদ্বৃদ্ধ হয়ে নিজেদের জানমাল সবকিছুকেই নির্দ্বধায় উৎসর্গ করে পৃথিবীতে ইসলামের মতো ন্যায়ের ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন, তেমনিভাবে তাদের নীতির অনুসরণ করে নবী করীম সা: এর আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করা প্রতিটি উম্মতে মুহাম্মদীর কর্তব্য হওয়া উচিৎ।
আশারায়ে মুবাশশারাঃ আশারায়ে মুবাশশারার শাব্দিক অর্থ হলো শুভ সংবাদ প্রাপ্ত দশজন। ইসলামী পরিভাষায় যে দশজন সাহাবি সম্পর্কে রাসূল সা: তাদের জীবদ্দশায় দুনিয়াতেই জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করেছেন, তাদেরকে
“ আশারায়ে মুবাশশারা” বলা হয়। আবু মনসুর বাগদাদী বলেছেন, ‘ সমস্ত উম্মতের মধ্যে সবোচ্চ মর্যাদার অধিকারী হলেন পর পর চার জন খলিফা। এরপর অবশিষ্ট ছয় জন। ‘ হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ: বলেছেন, “ দশজন সাহাবী জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদটি একটি হাদিসে থাকায় তারা ‘ আশারায়ে মুবাশশারা’ নামে প্রসিদ্ধ লাভ করেছেন। ” অন্যথায়, আলাদা আলাদাভাবে রাসূল সা: আরো অনেককেই জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদ দান করেছেন; যেমন নবীজি সা: এর বিবিগণ, আহলে বায়ত, হাসান, হোসাইন, তাদের মা ও নানি, হযরত হামযা প্রমুখ সাহাবায়ে কিরাম রা: । প্রকাশ থাকে যে, আশারায়ে মুবাশশারা বলতে যে দশজনকে বুঝায় তারা হলেন,
১। হযরত আবু বকর রা:
২। হযরত ওমর রা:
৩। হযরত উছমান গনি রা:
৪। হযরত আলী রা:
৫। হযরত তালহা রা:
৬। হযরত যুবায়ের ইবনুল আওযাম রা:
৭। হযরত সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা:
৮। হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ রা:
৯। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রা:
১০। হযরত আবু ওবায়দা ( আমের) ইবনুল জাররাহ রা:
আশারায়ে মুবাশশারা ঘোষণা দেয়ার প্রেক্ষাপট:
উপর্যুক্ত সৌভাগ্যবান মহাপুরুষদের ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ গোষণা দেয়ার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, হিজরী দশম সনে মদীনায় এব ভয়াবহ দুভিক্ষ দেখা দেয়। তখন বহুসংখ্যক লোক অর্ধাহারে অনাহারে কালাতিপাত করছিল। তাই খাদ্যসামগ্রীর অপ্রতুলতায় মদীনাবাসী সীমাহীন উদ্বিগ্নতা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিল। এমনিতর দুরবস্থার দিনে একদা মহানবী সা: মদীনায়র মসজিদে খুতবা প্রদান করছিলেন। এমন সময় সে মজলিশে এক লোক সংবাদ দিল যে, শাম দেশ থেকে প্রচুর খাদ্যসামগ্রী নিয়ে একদল বণিত মদীনায় এসেছে এবং তারা তা বিক্রি করতে চায়। এ সংবাদ শোনামাত্র উপস্থিত সাহাবাদের অনেকেই ব্যবসার উদ্দেশ্যে মসজিদ থেকে বের হয়ে ক্রয়বিক্রয়ে প্রবৃত্ত হয়েছিল। তবে মাত্র দশজন সাহাবি পার্থিব ব্যবসার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে প্রিয় রাসূল সা: এর বাণীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রকৃত আল্লাহ ভক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন। অর্থাৎ তারা সে পার্থিব লোভনীয় বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে মগ্নভাবে মহানবী সা: এর খুতবাই শুনছিলেন। এ ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেই পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেছেন, ং আর যখন কোথাও ব্যবসায় বাণিজ্য কিংবা কোন খেল-তামাশা অবলোকন করে, তারা আপনাকে খুতবায় রত অবস্থায় পরিত্যাগ করে বিক্ষিপ্তভাবে চলে যায়। আপনি তাদেরকে বলে দিন, তোমাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে যা কিছু রয়েছে তা বাণিজ্য এবং তামাশা থেকে উত্তম। আর আল্লাহতায়ালা উত্তম রিযিকদাতা।” এ প্রেক্ষাপটেই তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে, অর্থাৎ যারা সেদিন মহানবী সা: এর মজলিশ ত্যাগ না করে, বরং নিমগ্ন অবস্থায় ভক্তিভরে তাঁর বাণী শুনছিলেন তাদের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে জান্নাতি বলে ঘোষণা প্রদান করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ‘ আশারায়ে মুবাশশারা’ তথা জীবদ্দশায় বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজন যেভাবে পবিত্র কুরআন ও রাসূল সা: এর আদর্শে উদ্বৃদ্ধ হয়ে নিজেদের জানমাল সবকিছুকেই নির্দ্বধায় উৎসর্গ করে পৃথিবীতে ইসলামের মতো ন্যায়ের ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন, তেমনিভাবে তাদের নীতির অনুসরণ করে নবী করীম সা: এর আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করা প্রতিটি উম্মতে মুহাম্মদীর কর্তব্য হওয়া উচিৎ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন