পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০১৬ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কোরবানীর আভিধানিক ও পারিভাষিক সংজ্ঞা, কোরবানীর সূচনা।

ছবি
 আস্সালামু আলাইকুম। আজ আমি আপনার কোরবানীর বিষয়ে টিউন করবো। কোরবানীর দিনটিকে আরবীতে বলা হয় يو الا ضحية   . আর اضحية     শব্দটি একবচন, বহুবচনে اضاحي – আভিধানিক অর্থ-   (1)কানযুদ্দাকায়েকের প্রণেতা বর্ণনা করেন, الا ضحية ما يضحا اي يذبح . অর্থাৎ কোনো কিছু জবাই করা। (2)। ফিকহুল ইসলামীর প্রণেতার মতে, ঈদুল আযহার দিনে যা জবাই করা হয়। পরিভাষায়ঃ ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জিলহজ্জ মাসের নির্ধারিত দিন সমূহের  যে কোন দিনে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে চতুষ্পদ প্রাণী জবাই কারাকে কোরবানী বলে।   কোরবানীর সূচনাঃ ইতিহাস ও জীবনীমূলক কিতাবাদি থেকে জানা যায় যে, পৃথিবীতে এমন কোন জাতি ছিল না, যারা স্বীয় মাজহাব অনুসারে কোরবানী করত না। কোরবানীর এ ধারা হযরত আদম আ: এর সন্তান হাবিল কাবিলের মধ্যে বিবাহ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে, হযরত আদম আ: তাদেরকে এখলাছের সঙ্গে কোরবানী করার নির্দেশ প্রদান করে বললেন, তোমাদের যার কোরবানী কবুল হবে তার সঙ্গেই বিবাহ দিব। তখনকার যুগে কোরবানী কবুল হওয়ার আলামত ছিল, যে কোরবানীটি কবুল হতো তাকে আসমান থেকে একটি আগুন এসে জ্বালিয়ে দিত। উক্ত ভ্রাতৃদ্বয় কোরবানীর আদেশ প্রাপ্

কুরবানী: চেতনা ও তাৎপর্য।

ছবি
  হাফেজ মিনহাজ উদ্দীন আস্সালামু আলাইকুম। আশার করি সকলেই আল্লাহর রহমতের ভালো ভাবে দিন গুজরান করছেন। বন্ধুরা আজকে আমি ‘কুরবানী: চেতনা ও তাৎপর্য’ বিষয়ে লিখবো আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন। এ বিষয়ে পড়ার আগে প্রথমেই আমাদের জানা উচিত কুরবানী কি?  ‘কুরবানী’ একটি আরবী শব্দ। যার আভিধানিক অর্থ ত্যাগ করা, উৎসর্গ , বিসর্জন নৈকট্যলাভ ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায়  যিলহজ্জ মাসের দশ তারিখ থেকে বারো তারিখ পর্যন্ত সময়ের পরিসরে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বিশেষ কিছু পশু জবাইকে কুরবানী বলা হয়। আর এ উপলক্ষে পালিত উৎসবকেই আমরা বলি ঈদুল-আযহা বা কুরবানীর ঈদ।  বন্ধুরা পবিত্র ঈদ ও কুরবানী সম্পর্কে প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করেন,  ما عمل اُد مي من عمل يو ا نحر احب الي الله من اهراق الد   কুরবানীর ঈদের দিবসে আল্লাহ তাআলার কাছে মানব সন্তানের সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো পশু জবাই । মনে রেখ, কিয়ামত দিবসে কুরবানীর পশুটি তার শিং, লোম এবং হাড় সমেত উপস্থিত হবে এবং কুরবানীর রক্ত মাটি ষ্পর্শ করার পূর্বেই তা আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয়ে যাবে। সুতরাং তোমরা তৃপ্ত মনে কুরবানী কর। একজন কল্যাণকামী বিশ্বাসী ও অবিনশ্বর বেহেশতপ্রার্থী বা

সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় কওমী আলেমগণ

ছবি
সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় কওমী আলেমগণ: মুহাম্মদ রায়হান রাযী।। একসময় কাওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়ারা সাংবাদিকতা এবং ইংলিশ মিডিয়া থেকে দূরে ছিল , ফলে সত্য সংবাদ ধামাচাপা দিয়ে মিথ্যার প্রচারণা বেশি ছিল। এখনও হচ্ছে ! তবে , আমাদের সেইরকম কোনও চ্যানেল অথবা রেডিও না থাকলেও অনলাইনভিত্তিক www.ourislam24. com নামে একটি ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ রয়েছে , যেখানে বিভিন্ন সত্য সংবাদ মুহূর্তের মাঝেই পেয়ে যাই। একসময় আমরা এই বিষয়েও খুব দুর্বল ছিলাম। আলহামদু লিল্লাহ !! এখন সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে কাওমি মাদ্রাসার তরুণ আলেমগণ। কিন্তু আমাদের এই পথেও বাধা রয়েছে অনেক। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে , টেকনিক্যালে এগিয়ে যেতে হবে কাওমি আলেমদের।   লেখক: তরুন আলেম।    ফেসবোক

আশারায়ে মুবাশশারা ( সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবা)

অবতরনিকা: ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মুসলিমমাত্রই জানে ও মানে যে, পার্থিব জগতের কর্মফলের উপর নিভর করে পরকালের শান্তি বা বেহেশত ও শাস্তি বা দোযখ। কারা জান্নাতি হবে আর কারা জাহান্নামি হবে তাদের কর্মপদ্ধতি ও লক্ষণ পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে জানা যায়। তবে রাসূল সা: এর সাহাবিদের মধ্যে যারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নবীজি সা: এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামের জন্য নিজের জানমাল উৎসর্গ করতেও কুন্ঠিত হন নি তাদের অনেকেই তিনি জান্নাতি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এ শ্রেণীর সাহাবাদের সত্যতা ও নিষ্ঠার জন্য নবী করীম সা: তাদের প্রতি একান্ত সন্তুষ্ট হয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আশারায়ে মুবাশশারাঃ আশারায়ে মুবাশশারার শাব্দিক অর্থ হলো শুভ সংবাদ প্রাপ্ত দশজন। ইসলামী পরিভাষায় যে দশজন সাহাবি সম্পর্কে রাসূল সা: তাদের জীবদ্দশায় দুনিয়াতেই জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করেছেন, তাদেরকে  “ আশারায়ে মুবাশশারা” বলা হয়। আবু মনসুর বাগদাদী বলেছেন, ‘ সমস্ত উম্মতের মধ্যে সবোচ্চ মর্যাদার অধিকারী হলেন পর পর চার জন খলিফা। এরপর অবশিষ্ট ছয় জন। ‘ হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ: বলেছেন, “ দশজন সাহাবী জান্নাতি হওয়ার সুসংবাদটি

হজ্জের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ছবি
মিনহাজ  উদ্দীন।। পারম্ভিকাঃ হজ্জ ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির অন্যতম ভিত্তি। হজ্জ এর আভিধানিক অথ হচ্ছে সংকল্প করা। পারিভাষিক অর্থে নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বায়তুল্লাহ শরীফ ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ জিয়ারত  ও বিশেষ কার্যাদি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কাজ সম্পাদন করাকে হজ্জ বলে। হজ্জের রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস ও দীর্ঘ পটভূমি। এর প্রতিটি কাজ ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত ও তাৎপর্য। হজ্জের গুরুত্ব ও তাৎপর্যঃ আল্লাহতায়ালা হাকীম ও প্রজ্ঞাময়। তার কোন কাজই হিকমত ও রহস্য থেকে খালি নয়। ইসলামি মুসাফিরগণ হজ্জের হাকীকত ও তাৎপর্য্ সম্পর্কে অনেক দিকনির্দেশনা পেশ করেছেন। নিম্নে হজ্জের গুরুত্ব ও তাৎপর্যসমূহরে উপর আলোকপাত করা হলোঃ ১। হজ্জ ফরজ ইবাদতঃ হজ্জ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের একটি বিশেষ স্তম্ভ। এর ফজিলত অকাট্য দলিলের ভিত্তিতে প্রমাণিত। এর ফজিলত অস্বীকার করা কুফরী। সামর্থবান ব্যক্তির জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরজ। বিশুদ্ধমতে হজ্জ ফরজ হওয়ার পর বিলম্ব না করে আদায় করা অবশ্য কর্তব্য। হজ্জ হচ্ছে এমন ইবাদত যা সম্পাদন করতে জান ও মাল উভয়েরই প্রয়োজন হয়। হাদিসে হজ্জের ফজিলতের কথা বিশদৃভাবে বিবৃত

হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ এর জীবনী

হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ ছিলেন একজন প্রখ্যাত সাহাবী। মহানবী সাঃ তাঁকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। ১। নাম ও পরিচয়ঃ তাঁর নাম মুয়ায, উপনাম আব্দুল্লাহ বা আবু আবদির রহমান। পিতার নাম জাবাল। তিনি মদীনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রীয় একজন আনসার সাহাবী ছিলেন। ২। ইসলাম গ্রহণঃ নবুয়তের দ্বাদশ সালে যখন মদীনায় ইসলাম প্রচার শুরু হয় তখনই তিনি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয়গ্রহণ করেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ১৮ বছর । তিনি দ্বিতীয় আকাবায় রাসূল সা: এর হাতে বাইয়াত গ্রহণকারী সাতজন আনসারের অন্যতম। ৩। যুদ্ধে অংশগ্রহণঃ বদর ব্যতীত অন্যান্য সকল যুদ্ধে হযরত মুয়ায রা: অংশগ্রহণ করেন। কেউ কেউ বলেন, যেহেতু তিনি দ্বিতীয়  আকাবায় ইসলাম গ্রহণ করেন, তাই তিনি বদর যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্যলাভ করেছেন। ৪। চারিত্রিক গুণাবলিঃ হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ ছিলেন অনন্য গুণাবলির অধিকারী। সততা, মহত্ত্ব, বীরত্ব, কোমলতা, ধার্মিকতা প্রভৃতি ছিল তার চারিত্রিক ভূষণ। ৫। তাঁর মর্যাদাঃ হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সাহাবী ছিলেন। আকাবার দ্বিতীয় শপথের সময় রাসুল সা: তাঁকে লক্ষ্য করে বলেন- মুয়ায কতইনা উত্তম পুরুষ। ৬। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন

কুরআনে বর্ণিত নবীদের নাম

ছবি
অবতারনিকাঃ মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী- রাসূল প্রেরণ করেছেন। তন্মধ্যে পঁচিশ জন নবীর নাম উল্লেখ আছে।  পবিত্র কুরআন শরীফে ২৫ জন নবীর মধ্যে সূরা আনয়ামে ১৮ জন নবীর নাম উল্লেখ আছে। ১৮ জন নবীর নাম হলো- ১। হযরত ইবরাহীম আঃ ২। হযরত ইসহাক আঃ ৩।  হযরত ইয়াকুব আঃ ৪। হযরত নূহ আঃ ৫। হযরত দাউদ আঃ ৬। হযরত সোলাইমান আঃ ৭। হযরত আইয়ুব আঃ ৮। হযরত ইউসুফ আঃ ৯। হযরত মুসা আঃ ১০ । হযরত হারুন আঃ ১১।  হযরত যাকারিয়া আঃ ১২।  হযরত ইয়াহইয়া আঃ ১৩।  হযরত ঈসা আঃ ১৪।  হযরত ইসমাইল আঃ ১৫।  হযরত আল ইসায়া আঃ ১৬। হযরত ইউনুস আঃ ১৭। হযরত ইলিয়াস আঃ ১৮। হযরত লুত আঃ অবশিষ্ট সাতজন নবীরা হলেনঃ ১৯। হযরত আদম আঃ ২০।  হযরত ইদরীস আঃ ২১।  হযরত হুদ আঃ ২২। হযরত সালেহ আঃ ২৩। হযরত শোয়াইব আঃ ২৪। হযরত যুলকিফল আঃ ২৫। হযরত মুহাম্মদ সাঃ পড়া শেষ হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও আমাদের করণীয়

ছবি
    মিনহাজ উদ্দীন: ইসলাম সে তো পরশমানিক, তারে কে পেছেছে খুঁজি, পরশে তাহার সোনা হলো যারা, তাদেরই মোরা বুঝ।  সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! উল্লেখিত বিষয়ে আলোকপাত করার পূর্বে আমাদের জানতে হবে জঙ্গিবাদের পরিচয় সম্পর্কে। জঙ্গিবাদের ব্যাখ্যা বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, জঙ্গি, জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিবাদী শব্দগুলো  (Militant, Mililancy) শব্দগুলোর অনুবাদ। উর্দূ ও ফারসী ভাষায় জঙ্গ অর্থ যুদ্ধ, লড়াই ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি এ শব্দগুলো আমাদের মাঝে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।  শাব্দিক অর্থে যোদ্ধা, সৈনিক বা যুদ্ধে ব্যবহৃত বস্তু বুঝাতে এ শব্দগুলো ব্যবহার হয়ে থাকে। বর্তমানে জঙ্গিবাদ বুঝানো হয় রাজনৈতিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে আধুনিক অস্ত্রসহ বে-আইনীভাবে নিরপরাধ অসহায় অযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ইত্যাদি অপরাধে জড়িত সম্প্রদায়কে। আর এদের মতবাদকেই বলা হয় জঙ্গিবাদ। যার পরিভাষা হলো সন্ত্রাস।  ইসলামে জঙ্গিবাদ এ বিষয়ে কথা বলতে হলে সর্বপ্রথমেই বলতে হবে ইসলাম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে সমর্থন করেনা। কারণ ইসলামের মূল বক্তব্য হলো বিশ্ব মানবতার কল্যাণ সাধন ও মানব সমাজের সকল শ্রেণীর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্

ইসলাম ও মুসলমান

ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে কতিপয় হাদীস নিম্নে দেয়া হল- হাদিস ১। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রা: হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুসলমান ঐ ব্যক্তি যার জিহবা ও হাত হতে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। মোহাজির ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহ যা করতে নিষধ করেছেন, তা হতে বিরত থাকে। অন্য বর্ণনায়, এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করে, মুসলমানদের মধ্যে উত্তম কে? তিনি বলেন, ঐ ব্যক্তি যার রসনা ও হাত হতে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। ( বোখারী ও মুসলিম) হাদিস ২। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা: হতে বর্ণিত। রাসূল সা: কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল কোন ইসলাম উত্তম? তিনি বলেন, খাদ্যদান এবং পরিচিত বা অপরিচিত সকলকে সালাম প্রদান করা। ( বোখারী ও মুসলিম)

আহলুস সুন্নাত কারা? তাদের আকিদাসমূহ

ছবি
অবতারনিকাঃ মহানবী সা: এর ইন্তিকালের পর ইসলামের ওপর অন্ধকারের ঘনঘটা নেমে এসেছিল। ঠিক এমনি মুহূর্তে উদ্ভব ঘটে ভ্রান্ত মতবাদ খারেজী, শিয়া, ও মুতাযিলা সম্প্রদায়ের। বিরাজমান এ পরিস্থিতিতে হিজরী তৃতীয় শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফা মুতাওয়াক্কিলের আমলে ইমাম আবুল হাসান আল আশয়ারীর ধর্ম দর্শনের ওপর ভিত্তি করে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত আল্লাহপ্রদত্ত ও রাসূল সাঃ প্রদর্শিত আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত। নিচে বিস্তারিত আলোকপার করা হলো। আহলুস সুন্নাত এর আভিধানিক অর্থঃ  اهل   শব্দটি  একবচন, বহুবচনে   اهلون ; এর আভিধানিক অর্থ হলো-               ১।  الاقارب               ২।  العشيرة              ৩।  তথা সাথী। ৪।  অধিবাসী। ৫। অধিকারী। ৬। সদস্য। ا لسنة  এর আভিধানিক অর্থঃ                   ১।   الطللريق                 ২। আদর্শ।              ৩।  নীতিমালা ৪।  পদ্ধতি। । ৫। সম্প্রদায়। ৬। একত্রিত অর্থ হলো- সুন্নত অনুসারী দল। পারিভাষিক অর্থঃ ১। আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত এমন একটি দল, যারা নবী করীম সাঃ ও তাঁর সাহাবীগণের নির্ধারিত পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ২। চার মাযহাব ও তা

হজ্জের ফরয ও ওয়াজিবসমূহ

ছবি
হজ্জের ফরয তিনটি। যথা- 1. ইহরাম বাধাঃ হজ্জ বা ওমরার নিয়তে হাজীগণের সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করে নির্দিষ্ট মীকাত অতিক্রম এবং তালবিয়া পাঠ করতঃ কতিপয় নিষিদ্ধ কার্যাবলি হতে বিরত থাকার নাম ইহরাম। 2. আরাফায় অবস্থানঃ যিলহজ্জ মাসের নবম তারিখে সূর্য হেলে যাওয়ার পর থেকে 10 তারিখ সুবহে সাদেকের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মাঝে যে কোনো সময় কিছুক্ষণের জন্য আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা ফরয। 3. তাওয়াফে যেয়ারতঃ জামারাতে কংকর নিক্ষেপ করার পর কুরবানির দিনগুলোর যে কোনো একদিন মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করা ফরয। হজ্জের ওয়াজিবসমূহঃ হজ্জের ওয়াজিব পাঁচটি। যথা- 1. মুযদালিফায় অবস্থান করাঃ আরাফার ময়দান হতে সূর্যাস্থের সাথে সাথে স্থানত্যাগ করে মুযদালিফায় যাওয়া। সেখানে রাতে অবস্থান করা। 2. সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ী ( দৌড়ানো) করাঃ সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাত বার দৌড়ানো ওয়াজিব। 3. কঙ্কর নিক্ষেপঃ মিনায় অবস্থিত তিনটি জামারায় যিলহজ্জের 10, 11, 12 তারিখে শয়তানকে উদ্দেশ্য করে সর্বমোট 49 টি কঙ্কর (পাথর) নিক্ষেপ করা। 4. হলক বা কসরঃ কুরবানি করার পর ইহরাম ভঙ্গের উদ্দেশ্যে হাজীর মাথা মুণ্ডন করা

হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তাবলী

ছবি
হজ্জ ফরয হওয়ার বেশকিছু শর্ত রয়েছে। যেমন- 1. মুসলমান হওয়াঃ কেননা অমুসলিমের ওপর শরয়ী কোনো ইবাদত পালন বৈধ নয়। 2. স্বাধীন হওয়াঃ কেননা পরাধীন বা দাসদাসী কোনো কাজ করার অধিকার রাখে না। 3. বালেগ হওয়াঃ কেননা নাবালেগের ওপর শরয়ী বিধান প্রযোজ্য নয়। 4. সুস্থ হওয়াঃ হজ্জ পরিশ্রমের ইবাদত। অসুস্থের ওপর এটা ফরয নয়। 5. দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন হওয়াঃ কেননা অন্ধ ব্যক্তির ওপর হজ্জ ফরয নয়। 6. জ্ঞানবান হওয়াঃ সুতরাং পাগলের ওপর হজ্জ ফরয নয়। 7. অর্থনৈতিকভাবে সামর্থবান হওয়াঃ এটা আবশ্যকীয় সামগ্রী ও পরিবার পরিজনের নিকট প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত খরচের অতিরিক্ত হতে হবে। 8. রাস্তা নিরাপদ হওয়াঃ সুতরাং রাষ্ট্রী কোনো নিষেধাজ্ঞা বা রাস্তা নিরাপদ না থাকলে হজ্জ ফরয হবে না। 9. মহিলার সাথে স্বামী বা মুহাররাম থাকাঃ কারণ একা কোনো মহিলার পক্ষে  হজ্জে গমন করা সম্ভব নয়; যতি তার বাড়ী কাবাঘরের দূরত্ব 48 মাইল বা এর চেয়ে বেশি হয়। 10. যানবাহনের সুবিধা থাকাঃ কেননা যানবাহনের সুবিধা না থাকলে হজ্জে গমন করা সম্ভব নয়। ( মোঃ মিনহাজ উদ্দীন) তারিখ: 08/08/2016. 7পিএম

হজ্জ ফরয হওয়ার সময়কাল

ছবি
হজ্জ ফরয হওয়ার সময়কালের ব্যাপরে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ আছে। যেমন- 1. ইমামুল হারামাইন, ইবনুল জুযী (রহঃ) ও জমহুর ওলামার মতে, হজ্জ নবম হিজরীতে ফরয করা হয়েছে। কেননা মহান আল্লাহর বাণী - ولله علي الناس حج ا لبيث من ا سثطا ع ا ليه سبيلا এই আয়াত দ্বারা হজ্জ ফরয ঘোষনা দেয়া হয়। আর আয়াতটি নাযিল হয় নবম হিজরীতে। 2. আল্লামা রাফেয়ী ও ইবনে রাফায়া (রহ) এর মতে, হজ্জ ষষ্ঠ হিজরীতে ফরয হয়। 3. আল্লামা ওয়াকেদী রহ: বলেন হজ্জ পঞ্চম হিজরীতে ফরয করা হয়েছে। কেননা হযরত দিমাম ইবনে সালাবা রা: পঞ্চম হিজরীতে মদীনায় এসে হজ্জের কথা বলেছেন। সিদ্ধান্তঃ নবম হিজরীর শেষদিকে হজ্জ ফরয করা হয়। কেননা পবিত্র কুরআনের আয়াত-ولله علي الناس حج ا لبيث من ا سثطا ع ا ليه سبيلا  অবতীর্ণ হয় নবম হিজরীরশেষের দিকে। সে বছর রসূল সাঃ হযরত আবু বকর রাঃ কে আমিরুল হজ্জ মনোনীত করে হজ্জব্রত পালনের জন্য প্রেরণ করেন। এবং পরবর্তী দশম হিজরীতে তিনি হজ্জ আদায় করেন।

যাকাত সম্পর্কে হাদিস

হাদীস প্রসঙ্গঃ আলোচ্য হাদীসটি রাসূল সাঃ কর্তৃক মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ কে ইয়ামেনের গভর্নর হিসেবে প্রেরণের প্রাক্কালে যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা কায়েমের যে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন, তারই বর্ণনা উপস্থাপন করা হয়েছে। হাদীসের অনুবাদঃ  হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ হযরত মুয়ায ইবনে জাবালকে গভর্নর হিসেবে ইয়ামেনে প্রের‌ণ করলেন। এ সময় রাসূল সাঃ তাঁকে বললেন, তুমি এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছ, যারা আহলে কিতাব। প্রথমত তুমি তাদেরকে এ কথার সাক্ষ্য দিতে আহবার করবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ তথা উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর রাসূল। অতঃপর তারা যদি এ কথার আনুগত্য করে, তবে তাদেরকে জানিয়ে দিবে- আল্লাহ তায়ালা দিবারাতে তাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করে দিয়েছেন। তারা যদি এ কথারও আনুগত্য করে তবে তাদেরকে জানিয়ে দিবে- আল্লাহ তায়ালা তাদের ওপর যাকাত ফরয করে দিয়েছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে এবং গরীবদের মাঝে বণ্টন করা হবে। তারা যদি এ কথারও আনুগত্য করে, তবে সাবধান! তুমি তাদের উৎকৃষ্ট সম্পদ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে এবং মযলুমের ফরিয়াদ থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ

যাকাত আদায় না করার ভয়াবহ পরিণাম

হাদিস নং 1682. হাদিস প্রসঙ্গঃ   যাকাত ইসলামের অন্যতম ফরয ইবাদত এবং ইসলামের কল্যাণ রাষ্ট্রের আয়ের মূল উৎস। এজন্য আলোচ্য হাদীসে বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত মহানবী সা: সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যাকাত আদায় না করার ভয়াবহ পরিণামের কথা উল্লেখ করেছেন।  হাদীসের অনুবাদঃ  হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা যাকে ধনসম্পদ প্রদান করেছেন, কিন্তু সে তার যাকাত আদায় করেনি; কেয়ামতের দিন তার সম্পদকে এমন এক বিষধর সাপে রূপান্তর করা হবে, যা অত্যধিক বিষধর হওয়ার কারণে তার মাথার পশম থাকবে না এবং তার চোখের উপর দুটি কালো তিলক থাকবে।  কেয়ামত দিবসে ঐ সাপ তার গলায় হারের ন্যায় পরিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর সাপটি তার মুখের দু’দিকে অর্থাৎ উভয় চোয়ালে কামড় দিয়ে ধরবে। অতঃপর বলবে, ‘আমিই তোমার ধনসম্পদ, আমিই তোমার সঞ্চিত ধনভাণ্ডার’। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সমর্থনে কুরআনের আয়াত পাঠ করলেন। আয়াত হলো-

দিনের প্রথম উপার্জনকে ভক্তি জানানো

সকাল বেলা রাস্তায় চলাচল করলে অনেক সময় দেখা যায় যে, রিক্সা, সিএনজি চালক বা দোকানদারগণ দিনের প্রথম উপার্জন হাতে পাওয়ার পর তাতে চুমো দেয়; গাড়ির স্টিয়ারিং, হাতল বা কোন অংশে ছোঁয়ানোর পরে বুকে ও চোখে লাগায়। অনেককে কপালে ঠেকাতেও দেখা যায়। তেমনি কোন কোন ব্যবসায়ীও দিনের প্রথম উপার্জনকে এভাবে ভক্তি জানিয়ো থাকে। নিজের কষ্টে অর্জিত উপার্জনের উপর মায়া থাকা স্বাভাবিক। ‘দ্বীনে ফিতরাত’ ইসলামে এ স্বাভাবিক আকর্ষণ দোষণীয় নয়; কিন্তু উপরোক্ত ছোঁয়াছুঁয়ি ও কপালে ঠেকানোর মতো ভক্তিমূলক আচরণ অবশ্যই পরিত্যাজ্য। প্রথম উপার্জনকে ভক্তি জানালে পরবর্তী উপার্জনের পথ সুগম হবে- এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এসব আচরণের সবচেয়ে নিন্দিত দিকটা হল উপার্জনের মাধ্যমকে অর্থাৎ গাড়ি, পণ্য বা ব্যবসা- প্রতিষ্ঠানকে উপার্জনদাতা মনে করা। এমনকি কারও কারও কথাবর্তা থেকে তো পৌত্তলিকতারও আভাস পাওয়া যায়। বাস্তব কথা এই যে, এ মাধ্যমগুলো উপলক্ষ মাত্র। তাই সবকিছু ঠিক থাকার পরও সবার উপার্জন এবং সব সব সময়ের উপার্জন সমান হয় না। উপার্জন ও রিযিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালার হাতে। তিনি কখন কাকে কীভাবে রিযিক দেবেন এবং কোন উপায়ে দেবেন তা একমাত