কোরবানীর জরুরী মাসআলা

কোরবানীর গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা সমূহ:
মিনহাজ উদ্দীন
১। নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ব্যতীত ১০,১১ ও ১২ ই জিলহজ্জ এই তিন দিনের মধ্যে যাহার ঘরে সাড়ে ৭ তোলা সোনা, বা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা অথবা উহার সমপরিমাণ মালামাল মওজুদ থাকে তবে তাহার উপর কোরনী করা ওয়াজিব।
২। ১০ ই জিলহজ্জ হইতে ১২ ই জিলহজ্জের সূযাস্ত পর্যন্ত কোরবানী করা দুরুস্ত আছে। তবে প্রথম দিন কোরবানী করাই উত্তম। রাতে কোরবানী করা মাকরুহ।
৩। কোরবানীর পশু নিজ হাতে জবাই করা উত্তম। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলিয়া জবাই করিতে হইবে, তবে দোয়া পড়া মুস্তাহাব। নাম বলা জরুরী নয়।
৪। উট, গরু, মহিষ, ছাগল, দুম্বা ও ভেড়া কোরবানী করা দুরুস্ত আছে। উটের বয়স ৫ বছর, গরু ও মহিষ ২ বছর এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা ১ বছর হইতে হইবে। দাঁতাল হওয়া শর্ত নয়।
৫। উট, গরু, মহিষ ৭ জন পর্যন্ত শরীক হইয়া কোরবানী করিতে পারিবেন। তবে প্রত্যেকেরেই নিয়ত কোরবানীর হইতে হইবে। ৭ জনে ১ জনও যদি গোস্ত খাওয়ার নিয়তে কোরবানী করেন তবে কাহারও  কোরবানী দোরস্ত হইবেনা।  শরীকানা কোরবানীর গোস্ত সমভাবে ওজন করিয়া বন্টন করিতে হইবে। কোরবানীর গোস্তের এক তৃতীয়াংশ গরীব-মিছকিনদের দেওয়া মুস্তাহাব।
৬। কোরবানীর পশু সুস্থ-সবল ও নির্দেোষ হওয়া চাই। অন্ধ, খোড়া এবং এমন দুর্বল যাহা কোরবানীর স্থল পর্যন্ত পৌছিতে অক্ষম এবং লেজ ও কানের এক তৃতীয়াংশ কাটা থাকিলে কোরবানী দূরস্ত হইবেনা।
৭। যে যন্তুর জন্ম হইতে্ই শিং নাই কিংবা ছিল, পরে ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, কিন্তু মূল রহিয়াছে তাহার দ্বারা কোরবানী দূরস্ত আছে। সমূলে ভাঙ্গিয়া গেলে তাহা দ্বারা কোরবানী দূরস্ত নয়।
৮। যদি কেহ রোগ মুক্তির জন্য মছিবতে পড়িয়া অথবা কোন মাকসুদের জন্য কোরবানী মান্নৎ করে তাহলে উল্লেখিত শর্ত সমূহ পুরা হইলে উক্ত কোরবানী আদায় করা তাহার উপর ওয়াজিব। মান্নৎ কোরবানীর গোস্ত কোন ধনী লোক খাইতে পারিবে না। কেবল গরীব মিছকিনদের দান করিয়া দিতে হইবে। নিজে খাইলে বা ধনী লোকদেরকে দিলে মান্নৎ আদায় হইবে না।
৯। নিজের উপর ওয়াজিব কোরবানী মান্নৎ কোরবানীর দ্বারা আদায় হইবে না। পৃথক পৃথক কোরবানী দিতে হইবে।
১০। কোরবানীর পশুর চামড়া শরীর হইতে খসানোর পূর্বে বিক্রি করা মাকরূহ।
১১। কোরবানীর চামড়া পয়সা দ্বারা কসাইয়ের মজুরী দেওয়া, মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করা, জানাযার কাফন ক্রয় করা ও ইমাম মোয়াজ্জিনের বেতন দেওয়া দুরস্থ নয়। তবে যে সকল মাদ্রাসায় গোরাবা তহবিল ও লিল্লাহ বোর্ডিং বা এতিমখানা আছে সেখানে দেওয়া দুরস্থ আছে। বরং দ্বীনি শিক্ষার সাহায্যে সেখানে দান করিলে ছদকায়ে জারিয়ার ছওয়াব পাওয়া যাইবে।
১২। ৯ই জিলহজ্জ ফজর হইতে ১৩ই জিলহজ্জ আছর পর্যন্ত (৫দিন) প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর নিম্নলিখিত দোয়া ইমাম-মুক্তাদির প্রত্যেকের উপর একবার উচ্চস্বরে পড়া ওয়াজিব। একা একা নামাজ আদায়কারী ও মহিলারা মনে মনে পড়িবেন।
দোয়াঃ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কোরবানীর আভিধানিক ও পারিভাষিক সংজ্ঞা, কোরবানীর সূচনা।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড শিখুন।

হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ এর জীবনী